মিজান মাহী,স্টাফ রিপোর্টার, দুর্গাপুর: দুর্গাপুরে কোন প্রকার সনদ ছাড়াই মর্ডান হারবাল গ্রুপ সেন্টার খুলে সর্বরোগের চিকিৎসা দেওয়ার অভিযোগ উঠছে সাইদুর রহমান (৫০) নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ভ্রাম্যমান আদালতে কারাদন্ডের পরও থামেনি তাঁর অপচিকিৎসা। এ ঘটনায় উপজেলার পুরানতাহিরপুর গ্রামের জহুরুল ইসলাম রুবেল নামের এক যুবক তাঁর অপচিকিৎসা বন্ধের দাবিতে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছেন।কথিত চিকিৎসক সাইদুর রহমানের বাড়ি দুর্গাপুর উপজেলার পুরানতাহিরপুর কাঁচারীপাড়া গ্রামে। তিনি কোন ধরনের প্রশিক্ষণ সনদ ছাড়াই বাড়িতে বসে সর্বরোগের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। এতে শারিরিক জটিলতা ও পঙ্গুত্ব বরণ করতে হচ্ছে অনেক রোগীকে।
অভিযোগে জানা যায়, সাইদুর নিজ বাড়িতে মর্ডান হারবাল গ্রুপ সেন্টার খুলে ক্যন্সার, হাড়জোড়, যৌন, মহিলাদের যাবতীয় সমস্যা ও পাইলস সহ সর্বরোগের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। এতে তাঁর কোন লাইসেন্স ও রেজিস্ট্রেশন নেই। তাঁর কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাও নেই। তারপরও বাড়িতে বসে তিনি রোগীদের সব ধরনের চিকিৎসা দিচ্ছেন। আর এতে রোঘীদের থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা। প্রতিদিন তাঁর বাড়িতে দুর-দুরান্তের রোগীরা ভিড় করেন। দীর্ঘ দিনধরে তিনি সর্বরোগের চিকিৎসক দাবি করে রোগীদের সাথে প্রতারনা করে আসছেন। ২০২১ সালে অপচিকিৎসার দায়ে ভ্রাম্যমান আদালত তাকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। পরে ভ্রাম্যমান আদালতে ১৫ হাজার টাকা ও মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান। তারপরও বন্ধ হয়নি তার অপচিকিৎসা ।
তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে সাইদুর রহমান বলেন, ভ্রাম্যমান আদালতে জেল জরিমানার পর তিনি আর এখন চিকিৎসা করেন না। আমার বিরুদ্ধে ওই ব্যক্তি মনগড়া অভিযোগ দিয়েছেন। আমি আগে রোগী দেখতাম। প্রশাসনিক চাপে আর কোন রোগী দেখি না। কোন রোগের চিকিৎসা করাতেন ও কোন প্রশিক্ষণ সনদ আছে আছে কি না, জানতে চাইলে সাইদুর বলেন, হাত পা ভাঙা, যৌন ও পাইলসের রোগের ওষুধ দিতাম। তবে এসব এখন আর করি না।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি জানান, প্রশাসনের ভয়ে বাড়ির থেকে মর্ডান হারবাল গ্রুপ সেন্টার নামের সাইনবোড খুলে রেখেছেন তিনি। অথচ বাড়িতেই দেদারসে প্রতিনিয়ত রোগী দেখছেন। তার বাড়িতে দুর-দুরান্ত থেকে রোগী আসেন। টাকা নেওয়ার পরও রোগ ভাল না হলে প্রায়ই রোগীদের সঙ্গে চিকিৎসক সাইদুরের বাক-বিতান্ডা দেখা যায়।এ বিষয়ে জানতে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: মাহবুবা খাতুনের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি কল রিসিভ না করায় তাঁর বক্তব্যে পাওয়া যায়নি।
রাজশাহী জেলা সিভিল সার্জন আবু সাইদ মোহাম্মাদ ফারুক বলেন, পুরানতাহিরপুর এলাকা থেকে বার বার অভিযোগ আসছে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। আমি বিষয়টা দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্মকর্তা খতিয়ে দেখতে বলেছি। তিনি (উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা) আমাকে এখন পর্যন্ত কোন রিপোর্ট দেন নি। সেখান থেকে রিপোর্ট আসলে সে অনুযায়ী ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।#
সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. মিজানুর রহমান।
বার্তা সম্পাদক : বকুল হোসেন, সহ-বার্তা সম্পাদক : সৈয়দ মাহমুদ শাওন