আবির হোসেন সজল, লালমনিরহাটঃ লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে অযত্ন আর অবহেলায় মাটির সাথে মিশে যাচ্ছে কোটি টাকা মূল্যের লাইফ সাপোর্ট সম্পন্ন বিশেষায়িত একটি অ্যাম্বুলেন্স। প্রায় দুই বছর ধরে খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকা অ্যাম্বুলেন্সটি হারিয়ে ফেলছে কার্যক্ষমতা চুরি হয়ে যাচ্ছে অ্যাম্বুলেন্স এর দামী যন্ত্রাংশ। একটু যত্ন করলেই রক্ষা হতো হাসপাতালের এই কোটি টাকার সম্পদ।

জানা গেছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০২১ সালের মার্চে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে এসে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়ন ও তৎকালীন করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ১০৯ টি লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্স উপহারের ঘোষণা দিয়েছিলেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মোতাবেক দফায় দফায় সব’কটি অ্যাম্বুলেন্স বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

২০২১ সালের ২২ ডিসেম্বর লালমনিরহাট পৌরসভাকে ওই অত্যাধুনিক বিশেষায়িত একটি অ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর করেন ভারতের নিযুক্ত সহকারী হাই কমিশনার সঞ্জীব কুমার ভাট্টি। একই সঙ্গে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালকেও একটি লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্স উপহার দেওয়া হয়। এদিকে হাসপাতালটি অবকাঠামোগত উন্নয়ন হলেও হাসপাতালের কর্মকর্তা কর্মচারীদের মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি। ভারত সরকারের উপহার পাওয়া পৌরসভার অ্যাম্বুলেন্সটি পৌর মেয়র ড্রাইভার নিয়োগ দিয়ে সচল রেখে সেবা দিচ্ছেন। আর হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সটি কর্তৃপক্ষের উদাসিনতা ও অযত্ন আর অবহেলায় প্রায় দুই বছর ধরে খোলা আকাশের নিচে পড়ে থেকে মাটির সাথে মিশে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে চুরি হয়ে গেছে অ্যাম্বুলেন্সটির মূল্যবান যন্ত্রাংশ।

হাসপাতালের কর্মরত কয়েকজন কর্মচারি বলেন, অ্যাম্বুলেন্সটি অযত্নে পরিত্যাক্ত অবস্থায় থাকায় ভিতরের যন্ত্রপাতি এক শ্রেণির অসাধু কর্মচারিরা খুলে বিক্রি করেছে। উপহার পাওয়া মুল্যবান লাইফ সাপোর্ট এম্বুলেন্সটির সেবা চালু করার দাবী জানান স্থানীয়রা।

লালমনিরহাট পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম স্বপন বলেন, কোটি টাকা মূল্যের অত্যাধুনিক একটি অ্যাম্বুলেন্স এভাবে অযত্ন আর অবহেলায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফেলে রেখেছে, এটা খুবই দুঃখজনক! হাসপাতালে আসা রোগীরা এই অ্যাম্বুলেন্স সেবা থেকে বঞ্চিত হবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। যত দ্রুত সম্ভব অ্যাম্বুলেন্স সেবা চালু করার দাবী জানান তিনি।

লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ রমজান আলীর কাছে এম্বুলেন্সটির ভেতরের অংশ দেখতে চাইলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে তিনি সংবাদকর্মীদের কিছু না বলে তড়িঘড়ি করে কার্যালয় ত্যাগ করেন।