রাজশাহী ট্রিবিউন২৪ ডেস্ক :পশ্চিম ভারতের অন্যতম বড় শহর আহমেদাবাদ। গুজরাটের সাবেক রাজধানী। বাণিজ্যিক নগরীতে চামড়া পোড়া না হলেও এখন গরম। আকাশে কড়কড়া রোদ। ফাইনালের দিন তাপমাত্রা থাকবে ৩৩ ডিগ্রি। বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই। সাবরমতী নদীর পাড়ের শহরের কেন্দ্রস্থলে নরেন্দ্র মোদি ক্রিকেট স্টেডিয়াম। যা পরিচিত সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল ও মোতেরা স্টেডিয়াম নামে। ১ লাখ ৩২ হাজার আসনের স্টেডিয়ামে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া আজ মুখোমুখি হবে বিশ্বকাপ ফাইনালে। দুই দল এবার নিয়ে পরস্পরের বিরুদ্ধে দ্বিতীয়বার ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে।
২০০৩ সালে জোহানেসবার্গের ফাইনালে ভারতকে কাঁদিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। এবার কি প্রতিশোধের ফাইনাল? ভারত খেলবে ১৯৮৩ ও ২০১১ সালের পর তৃতীয় শিরোপা জিততে। অস্ট্রেলিয়া খেলছে ১৯৮৭, ১৯৯৯, ২০০৩, ২০০৭ ও ২০১৫ সালের পর ষষ্ঠ শিরোপা জিততে। আজকের ফাইনাল হবে ‘টিপিক্যাল’ ভারতীয় উইকেটে। উইকেট পুরোপুরি কালো মাটির। অন্যান্য উইকেটগুলোর মতো রানবন্যায় ভাসবে না আহমেদাবাদের উইকেট। মুম্বাই, দিল্লি, পুণের মতো রানের উইকেট নয়। তাই উইকেট দেখে একটু চিন্তিত অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক প্যাট কামিন্স, ‘উইকেট দেখে ভালোই মনে হয়েছে। তবে এখনো ২৪ ঘণ্টা বাকি আছে।’ তার এই কথাতেই মনে হচ্ছে, এটা ৩০০ রানের উইকেট নয়। অবশ্য উইকেট নিয়ে খুব চিন্তিত নন ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা, ‘আমাদের ক্রিকেটাররা দারুণ ছন্দে রয়েছেন। এই উইকেটে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে আমাদের। আমরা আমাদের কাজগুলো করতে চাই’।
আহমেদাবাদে প্রথম ওয়ানডে হয় ১৯৮৪ সালে। স্টেডিয়ামের অভিষেক ম্যাচ খেলেছিল ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৩০টি ওয়ানডে হয়েছে এখানে। পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, যে দল ভালো খেলবে, তারাই জিতবে। আগে ব্যাট করে ও রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড সমান ১৫টি করে। অবশ্য চলতি বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত যে ৪টি ম্যাচ হয়েছে, তাতে পরে ব্যাট করে জয়ের রেকর্ড ৭৫ শতাংশ। চার ম্যাচের তিনটিতে রান তাড়া করে জিতেছে দলগুলো। বিশ্বকাপে এই মাঠে আগে ব্যাট করে জয়ের রেকর্ড অস্ট্রেলিয়ার। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যাট করে ২৮৬ রান করেছিল অস্ট্রেলিয়া। গত আসরের চ্যাম্পিয়নরা অলআউট হয়েছিল ২৫৩ রানে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের ১৯২ রান ভারত টপকে যায় ৩ উইকেট হারিয়ে ১১৭ বল হাতে রেখে। অবশ্য এই মাঠের সর্বশেষ ১০ ম্যাচের ৬টিতেই জিতেছে রান চেজ করা দল। প্রথমে ব্যাট করে এই মাঠের গড় রান ২৪৩। সর্বোচ্চ রান ২ উইকেটে ৩৬৫, দক্ষিণ আফ্রিকার। রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড ৩২৫ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৩২৪ রান তাড়া করে ভারত জিতেছিল। এই মাঠে ৩০ ম্যাচের মাত্র ৭ ইনিংসে রয়েছে তিনশোর্ধ্ব স্কোর।
কালো মাটির উইকেট বলে স্পিনাররা বাড়তি সুবিধা আদায় করে নিয়েছেন বিশ্বকাপে। যদিও উইকেট শিকারের হার পেসারদের বেশি। ৪ ম্যাচে পেস বোলাররা উইকেট নিয়েছেন ৩৫টি এবং স্পিনাররা ২২টি। মিতব্যয়ী বোলিং অস্ট্রেলিয়ান লেগ স্পিনার অ্যাডাম জাম্পার, ২১ রানে ৩ উইকেট। ভারতের চায়নাম্যান স্পিনার কুলদীপ যাদবও দারুণ বোলিং করেন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। তার স্পেল ছিল ৩৫ রানে ২ উইকেট। কালো মাটির উইকেটে জাম্পা, ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে লড়াই হবে কুলদীপ, রবীন্দ্র জাদেজার। বল হাতে সামি, জশপ্রীত বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজের লড়াই হবে জশ হ্যাজলউড, মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্সের। ব্যাট হাতে লড়াই হবে রোহিত শর্মা, শুভমন গিল, বিরাট কোহলি, শ্রেয়াস আইয়ার, লোকেশ রাহুলদের সঙ্গে ডেভিড ওয়ার্নার, ট্রাভিস হেড, মিচেল মার্শ, স্টিভ স্মিথ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েলদের।
সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. মিজানুর রহমান।
বার্তা সম্পাদক : বকুল হোসেন, সহ-বার্তা সম্পাদক : সৈয়দ মাহমুদ শাওন