রাজশাহী ট্রিবিউন২৪ ডেস্ক : বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ রুহুল আমিনের ৫২তম শাহাদাতবার্ষিকী আজ ১০ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের আজকের এই দিনে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় তিনি খুলনার রুপসা নদীতে বাংলাদেশের বিজয়ের ৬ দিন পূর্বে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর জঙ্গি বিমান থেকে ছোড়া বোমায় দগ্ধ হয়ে শাহাদাতবরণ করেন।
এ দিবসটি উপলক্ষে রোববার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ী উপজেলার দেওটি ইউনিয়নে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন নগরে উপজেলা প্রশাসন এবং রুহুল আমিন গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘরের উদ্যোগে আলোচনা সভা, মিলাদ মাহফিল, খাবার বিতরণের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সোনাইমুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন, বীরশ্রেষ্ঠের জ্যেষ্ঠ কন্যা নুরজাহান বেগম, দৌহিত্র মো. সোহেল চৌধুরীসহ মুক্তিযোদ্ধা, শিক্ষার্থী ও পরিবারের সদস্যবৃন্দ।
চট্টগ্রাম বিভাগের একমাত্র বীরশ্রেষ্ঠ খেতাব অর্জন করেন বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মো. রুহুল আমিন। বাবা মো. আজহার পাটোয়ারী ও মাতা জুলেখা খাতুনের ঘর আলোকিত করে ১৯৩৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন এ বীর যোদ্ধা। ১৯৪৯ সালে সোনাইমুড়ী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এইচএসসি পাস করেই পরিবারের অর্থের যোগান দিতে ১৯৫৩ সালে জুনিয়র মেকানিক্যাল অফিসার হিসেবে পাকিস্তান নৌ-বাহিনীতে যোগদান করেন।
১৯৭১ সালের যুদ্ধের সময় তিনি চট্টগ্রামে কর্মরত ছিলেন। সেই সময় সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে নৌঘাঁটি থেকে পালিয়ে নিজ বাড়িতে আসেন। এরপর যুবকদের প্রশিক্ষণ দিতে থাকেন। একাত্তরের মে মাসের প্রথম সপ্তাহে পাঁচ শতাধিক প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত যুবকদের নিয়ে তিনি যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। যুদ্ধকালে জাহাজ পলাশ ও পদ্মার স্কোয়াড্রন লিডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালের ১০ ডিসেম্বর খুলনার রূপসা নদীতে মুক্তিযোদ্ধাদের বহনকারী যুদ্ধ জাহাজ পলাশের ইঞ্জিনরুমের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সে সময় পাকিস্তান বিমানবাহিনীর ছোড়া বোমার আঘাতে গুরুতর আহত হন। আহতাবস্থায় রাজাকারের হাতে তিনি ধরা পড়েন। আহত এ বীর সন্তানকে তারা বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করে রূপসার পাড়ে।
মরণোত্তর বিভিন্ন সময়ে নানা পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত করা হয়েছে বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ রুহুল আমিনকে। তার নামে রো রো ফেরির নামকরণ করা হয় ‘বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন’। ২০১২ সালে তার বাড়ির সামনে বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মো. রুহুল আমিন গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর নির্মাণ করা হয়। নান্দিয়াপাড়ায় বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মো. রুহুল আমিন ডিগ্রি কলেজ নামকরণ ও সরকারিকরণ করা হয়। বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মো. রুহুল আমিন একাডেমি স্থাপন করা হয়।
পরিবার ও স্থানীয়দের দাবি, জাতির এই মহান বীর যোদ্ধার কবর খুলনার রূপসা নদীর পাড় থেকে তার জন্মস্থান নোয়াখালীর দেওটিতে স্থানান্তর করার।
সূত্র : আরটিভি
সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. মিজানুর রহমান।
বার্তা সম্পাদক : বকুল হোসেন, সহ-বার্তা সম্পাদক : সৈয়দ মাহমুদ শাওন