নিজস্ব প্রতিবেদক,তানোর : রাজশাহীর তানোর উপজেলার রায়তান বাজে আকচা হিন্দুপুকুর ও মথুরাপুর ফসলি মাঠের পাঁচজন কৃষকের প্রায় সাড়ে ১২বিঘা জমির আলু বীজ অবস্থায় পচে গেছে বলে অভিযোগে উঠেছে। ডিলার নকল বীজ দিয়েছে বলে সন্দেহ করছেন কৃষকেরা। তবে আসল বীজ দেওয়া হয়েছে বলে দাবি ডিলারের।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকেরা বলছেন, তারা তানোর পৌরশহরের জিওল মোড়ের হাবিবের দোকান থেকে ব্র্যাক কোম্পানির এ-গ্রেড জাতের আলুর বীজ কিনেছিলেন। তিনি ব্র্যাক কোম্পানির আলুর বীজের সাবডিলার। মূলত পার্শ্ববতী মোহনপুর উপজেলার ধুরইল বাজারের মুর্তজা ডিলারের কাছ থেকে এ বীজগুলো সাবডিলার হাবিব কিনেছিলেন। তারা প্রতি বছর ব্র্যাক কোম্পানির আলুর বীজ রোপণ করেন। এবার ওই সাব-ডিলারের দোকানের ব্র্যাকের এ-গ্রেড আলুর বীজ কিনে রোপণ করেছেন। কিন্তু তারা এই আলুর বীজ রোপণ করে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন।
রায়তান বাজে আকচা হিন্দুপুকুর ও মথুরাপুর ফসলি মাঠের গিয়ে দেখা গেছে, বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে আলুর খেত। ওই মাঠের কৃষকদের অনেকেরই আলুর বীজের চারা বড় হয়েছে। এসব খেত কৃষকেরা পরিচর্যা করছেন। ওই মাঠের ৪-৫ জন কৃষকের জমির আলুর বীজের চারা গাছ বড় হচ্ছে না। আবার কিছু চারা উঠলেও মাটির নিচে আলু পচে নষ্ট হয়ে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক আব্দুল মালেক বলেন, আমি আলুর বীজ কিনতে জিওল মোড়ের হাবিবের দোকানে বুকিং দিয়েছিলাম। ব্র্যাকের এ-গ্রেড জাতের আলু কিনে প্রায় ২০ বিঘা জমিতে রোপণ করেছিলাম। রোপণের ১৯দিন অতিবাহিত হলেও তাঁর প্রায় সাড়ে সাত বিঘা জমির আলুর বীজের চারাগাছ ওঠেনি। আবার কিছু চারা উঠলেও সেগুলো আলু মাটির ভেতরে পচে গেছে। আগে কখনও এমন হয়নি।
কৃষক আলম, আশরাফুল, গোলাম রাব্বানী ও নূর ইসলাম বলেন, আলু রোপণ করেছি, কিন্তু মাটির ভেতরে সব পচে যাচ্ছে। আমরা ধুরইল বাজারের ডিলার মুর্তজার মাধ্যমে সাব-ডিলার হাবিবের দোকান থেকে ৮৫ বস্তা এ-গ্রেড আলু লাগিয়েছিলাম। তাঁরা আরও বলেন, আলুতে একবার সেচ দেওয়ার পর মনে করেছিলাম গাছ উঠবে। কিন্তু জমিতে অনেক আলুর গাছ ওঠেনি। আবার উঠলেও সেসব গাছের আলু পচে গেছে।
পৌরশহরের জিওল মোড়ের হাবিব বলেন, চলতি মৌসুমে ব্র্যাকের এ-গ্রেড ২৩১ বস্তা ও বি-গ্রেড ৩০০ বস্তা কারেজ আলুর বীজ বিক্রি করেছি। এ- গ্রেডের আলুর বীজ প্রায় ৫৫ কৃষক কিনেছেন। এর মধ্যে ৫ জন কৃষকের অভিযোগ করেছেন, তাদের আলুর বীজ সঠিক ছিল না। কৃষকেরা সঠিকভাবে রোপণ করতে পারেনি। সেইসঙ্গে কয়েকদিন আগে অতিবর্ষণে লাগানো ওই আলু বীজের ক্ষতি হয়েছে। আলু বীজ রোপণের পর চারা গজানোর পরে শুকিয়ে যাওয়ার দায় আমার নয়। আমি যে পেয়েছি তাই বিক্রি করেছি। তবে মোহনপুর উপজেলার ধুরইল বাজারের ডিলার মুর্তজার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ নিয়ে ব্র্যাকের টেরিটরি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, আমরা কয়েকজনের অভিযোগ পেয়ে ওই মাঠে গিয়েছিলাম। এটা কৃষকের ভুল। তারা নিজেদের দোষ স্বীকার করছে না। তারপরেও আমাদের মনিটরিং টিম ওই মাঠে গিয়ে আলুর খেত দেখবেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদ বলেন, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।#
Leave a Reply