শিমুল খান সজিব বাগমারা : রাজশাহী-৪(বাগমারা) আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উপজেলা জুড়ে নতুন করে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে নৌকার প্রার্থী ও তাঁর অনুসারীদের কর্মকান্ডে। শান্তির বাগমারায় নৌকা প্রতীক পাওয়ার পর থেকে উপজেলা জুড়ে ত্রাসের রাজত্ব যেন কায়েম করে চলেছে নৌকার প্রাথী আবুল কালাম আজাদ। নৌকার বিপক্ষে কাঁচি প্রতীকের ভোট করলেই হামলার শিকার হতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। কবে যে কাকে মারপিট করছে সেটার কোন হিসেব নেই। প্রতিদিনই নৌকার অনুসারীদের হামলার শিকার হয়ে কাউকে না কাউকে মেডিকেলে ভর্তি হতে হচ্ছে।
উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কাঁচি প্রতীকের নির্বাচনী ভাংচুরের পাশাপাশি পোস্টার লাগাতে বাধা প্রদান, পোস্টার ছিড়ে পুড়িয়ে ফেলা সহ হুমকী-ধামকী অব্যাহত রয়েছে। নৌকার প্রার্থী সহ তার অনুসারীদের এমন কর্মকান্ডের ঘটনায় বেশ কয়েকটি মামলা সহ অভিযোগ হয়েছে বিভিন্ন সময়। প্রশাসন সহ আইন শৃংখলা বাহিনীর পক্ষ থেকে সেগুলো বন্ধে আইনগত পদক্ষেপও নিয়েছেন। এরপরও বন্ধ হচ্ছে না তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। আবুল কালাম আজাদ সহ তার অনুসারীরা বুলেটের ভয় দেখিয়ে অরাজকতার সৃষ্টি করেছেন বলে অনেক অভিযোগ তুলেছেন।
সম্প্রতি বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে জেলা রিটানিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ, এসপি, নির্বাচন কর্মকর্তা সহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রধান মিলে নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ এবং কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক এমপির মধ্যে সংঘাত ভুলে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পথে আসার জন্য মিল করে দেয়া হয়েছে। ওই সময় মোলাকাত করার পাশাপাশি কোলাকুলি করেন তারা। তবে সেটা বেশিক্ষণ দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। সেই রাতেই কাঁচি প্রতীকের বেশ কয়েকটি নির্বাচনী অফিস আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়। দিনের বেলায় বাগমারা জুড়ে যেখানে কাঁচি প্রতীকের পোস্টার লাগানো হয় রাতে সেগুলো কেটে নিয়ে যাওয়া হয়।
নির্বাচনের আগেই যে প্রার্থী এমন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ঘটিয়ে উপজেলাতে আতঙ্কের সৃষ্টি করতে পারে তাকে কিভাবে লোকজন ভোট দিয়ে বিজয়ী করবে। কাঁচি প্রতীকের প্রার্থী তিন বারের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক এমপি বলেন, আমি ১৫ বছরে অশান্ত আর রক্তাক্ত বাগমারাকে শান্তি এবং উন্নয়নের জনপদে পরিণত করেছি। শান্তির বাগমারায় কোন ভাবে অশান্তি আর সন্ত্রাসীর জনপদে পরিণত করতে দেবো না। ভোটাররা এবার বুলেটের ভয় দেখানো সন্ত্রাসীদের উচিৎ জবার দিবে ব্যালটের মাধ্যমে। ভোটাররাই পারে শান্তির জনপদকে ধরে রাখতে।
ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক এমপি আরো বলেন, আমি জনগণের প্রার্থী হিসেবে কাঁচি প্রতীকে নির্বাচন করছি। বাগমারার আপামর জনগণ কাঁচি প্রতীকে রায় দিয়ে শান্তির জনপদের উন্নয়ন নিশ্চিত করবে। নির্বাচনের আগেই যারা হামলা করার পাশাপাশি ভয়ভীতি দেখাতে পারে তারা কিভাবে মানুষকে শান্তিতে রাখবে। সেই সাথে অনেকের চেহারা পরিবর্তন করে দেয়ার হুমকী দিয়েছে। কাঁচি প্রতীকের পক্ষে যে ভাবে জনতার ঢল নেমেছে তাতে করে বুলেটের ভয় দেখিয়ে তাদের ভোট দিতে বাধা সৃষ্টি করে লাভ হবে না। আসন্ন নির্বাচনে শান্তির প্রতীককে নির্বাচিত করার দায়িত্ব বাগমারাবাসীর।
সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার উজ্জল হোসেন বলেন, নির্বাচন কমিশন শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দিতে বদ্ধ পরিকর। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেউ সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সৃষ্টি করতে চাইলে ছাড় দেয়া হবে না। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিবো। ভোটাররা তাদের মূল্যমান ভোট যাকে খুশি তাকে দিয়ে নির্বাচিত করবে। শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে নির্বাচন কমিশন।
Leave a Reply