1. admin@rajshahitribune24.com : admin :
  2. rajshahitribune192@gmail.com : editor man : editor man
তীব্র তাপদাহে ঈশ্বরদীতে লিচুর গুটি শুকিয়ে যাচ্ছে! - Rajshahi Tribune24 | রাজশাহী ট্রিবিউন২৪
মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:১৪ পূর্বাহ্ন

তীব্র তাপদাহে ঈশ্বরদীতে লিচুর গুটি শুকিয়ে যাচ্ছে!

  • প্রকাশিত : শনিবার, ৪ মে, ২০২৪
  • ৩২ বার পঠিত

রাজশাহী ট্রিবিউন২৪ ডেস্ক : সুমিষ্ট, টসটসে রসালো লিচু খ্যাত অঞ্চল হিসেবে সারাদেশে কিন্তু অনেকটাই পরিচিত পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার লিচু। চলতি মৌসুমে টানা অনাবৃষ্টি আর তীব্র তাপদাহে লিচুর গুটির আকৃতি বাড়ছে না।

তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে লিচুর গুটির একাংশ শুকিয়ে লিচুর গুটি ঝরে পড়ছে। এতে অনেক বাগান লিচু শূন্য হয়ে পড়ছে। তাই ফলন নিয়েও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন লিচুর বাগান মালিক ও চাষিরা। গাছের গোড়ায় কীটনাশক, সেচ, গাছে স্প্রে করেও প্রতিকার মিলছে না।দ্রুত সময়ের মধ্যে যদি কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি না হয়, তবে লিচুর গুটি শুকিয়ে আকৃতি ছোট হয়ে পড়বে। কিছুদিন পর লিচুতে ফাঁটল ধরবে। এমতাবস্থায় আর্থিকভাবে ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ঈশ্বরদীর লিচু চাষি ও বাগান মালিকেরা। পাশাপাশি উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ারও আশঙ্কা করছেন ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি বিভাগ

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) সকালে ঈশ্বরদী উপজেলার বিভিন্ন লিচু চাষি ও বাগান মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কিছুদিন আগে যতদূর চোখ যায়, গাছে গাছে মুকুলের সমারোহ দেখে লিচু চাষিরা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেই স্বপ্ন ধূলিসাৎ হওয়ার পথে। গত দুই সপ্তাহ জুড়ে টানা তীব্র তাপপ্রবাহ প্রকৃতির ভয়ংকর রূপে লিচুর গুটির বোঁটা শুকিয়ে ঝরে পড়ছে। লিচুর ফলনে বিপর্যয় ঘটছে। এই দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ঈশ্বরদীর লিচু চাষি ও বাগান মালিকেরা। লিচু বাগানের মালিক-চাষিরা উপজেলার কৃষি বিভাগের দেওয়া পরামর্শে বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

ঈশ্বরদী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, ঈশ্বরদী উপজেলায় তিন হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হচ্ছে। চলতি বছর তিন হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে লিচু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১০ লাখ মেট্রিক টন।

 

মাঘ মাস জুড়ে শীত বেশি থাকার কারণেই লিচুর মুকুল দেরিতে আসা শুরু অর্থাৎ মাঘের শেষ সময়ে লিচুগাছে ব্যাপকভাবে মুকুল আসা শুরু হয়। আর চৈত্রের মাঝামাঝিতে লিচু গাছের মুকুল ধরে সবুজ কুড়ি। কিন্তু বৈশাখের শুরুতে বৈরী আবহাওয়াতে প্রকৃতি এখন অনেকটা রুক্ষ। সবুজ পাতার মাথায় থোকায় থোকায় লিচুর গুটিতে প্রকৃতি সেজেছে এক অপরূপ সাজে। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় বর্তমান এখন লিচুর গুটি আকারে ছোটই রয়েছে। ক্রমেই লিচুর গুটি শুকিয়ে ঝরে পড়ছে।

 

চলতি মৌসুমে এক ছিটেফোঁটা বৃষ্টির দেখা কিন্তু মেলেনি। তীব্র তাপদাহের কারণে লিচুর গুটি যেন ঝরে না পড়ে, কৃষি অফিসের পরামর্শক্রমে চেষ্টা করছেন লিচু বাগানের চাষি ও বাগান মালিকেরা। এখন যদি লিচুর গুটি ধরে রাখা যায়, তবে ব্যাপক ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।ঈশ্বরদীর সলিমপুর ইউনিয়নের মিরকামারী গ্রামের লিচু চাষি আবুল কালাম আজাদ বাংলানিউজকে বলেন, আমার ২০ বিঘা জমিতে লিচুর আবাদ রয়েছে। মৌসুমের শুরুতে গাছে গাছে মুকুল ভরা ছিল। লিচুর গুটি এসেছিল ভালো। কিন্তু ঈশ্বরদীতে প্রচণ্ড তাপদাহের কারণে গুটি ঝরে পড়ছে। গাছের শতকরা ৪০ ভাগ গুটিও এখন আর নেই। কিন্তু আমি যাদের কাছে বাগান বিক্রি করেছি, তাদের খরচের টাকাই উঠবে না। এ বছর তাদের লোকসান হবে। যারা লিচুর গুটি দেখে বাগান কিনেছিলেন, তারা এখন টাকা ফেরত চাচ্ছেন। এই সংকট শুধু আমার একার না। আমার মত অনেক লিচু বাগান বিক্রেতা বিপদে আছেন।

পাকশী ইউনিয়নের চর রূপপুর গ্রামের লিচু চাষি পলাশ আহমেদ বলেন, গত দেড় মাস তীব্র তাপদাহ। বৃষ্টি নেই। লিচুর বাগানগুলোতে পানির হাহাকার। লিচু বাগানের মাটি ফেঁটে চৌচির। নিয়মিত সেচের ব্যবস্থা রেখেও কিছুতেই যেন গুটি টিকছে না। আমার ১০ বিঘা জমিতে দেশি, বোম্বাই ও কদমী জাতের লিচুর চাষ করেছি। অতিরিক্ত খরার কারণে লিচুর গুটির এক অংশ শুকিয়ে লিচুর গুটি ঝরে পড়ছে। এখন লিচুর গুটি টেকানোর জন্য নিয়মিত সেচ, গাছে কীটনাশক ও বিভিন্ন ধরনের বালাইনাশক দিয়ে গাছ ধুয়ে দিচ্ছি। এক সপ্তাহের মধ্যে চলতি মৌসুমে বৃষ্টি না হলে লিচুর ফলন বিপর্যয় ঘটবে। ঈশ্বরদীর লিচু উৎপাদন ব্যয়ও তুলতে পারবে না লিচু চাষিরা।

ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন বাংলানিউজকে জানান, চলতি মৌসুমে ঈশ্বরদী উপজেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। মঙ্গলবার (০২ মে) দুপুরে ঈশ্বরদী উপজেলা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পুড়ছে। আর তীব্র তাপমাত্রায় প্রকৃতি রুক্ষ রূপ ধারণ করছে। সূর্যের প্খখর তাপে ঝলসে যাচ্ছে প্রাণ ও প্রকৃতি।

তিনি আরও জানান, ঈশ্বরদী উপজেলার ওপর দিয়ে কর্কট ক্রান্তি রেখা আড়াআড়িভাবে অতিক্রম করছে। গাছ-গাছালির সংখ্যা কম, জলরাশির বেশ সংকট। আকাশে মেঘ কম অর্থাৎ মেঘবিহীন আকাশ। যে কারণে রোদ বেশি। তবে কয়েকদিনের মধ্যে বৃষ্টির সম্ভবনা নেই।

পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মিতা সরকার বাংলানিউজকে জানান, চলতি মৌসুমে ঈশ্বরদীতে কোনো বৃষ্টি হয়নি। এতে পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। তাপমাত্রা বেশি, অতিরিক্ত ক্ষরার কারণে অনাবৃষ্টিতে লিচুর গুটি শুকিয়ে ঝরে যাচ্ছে।

আমরা লিচু চাষি ও বাগান মালিকদের পরামর্শ দিয়েছি, তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রির বেশি হলেই লিচুর গুটি শুকিয়ে ঝরে পড়তে পারে। গাছের গোঁড়ায় মাটি দিয়ে রিং আকৃতি করে পানি দিয়ে খড় বা বিচালি চাপা দিয়ে রাখতে হবে, যেন পানিটা ধরে রাখা যায়। বাগানের মাটি শুকিয়ে গেলে লিচুর গুটি শুকিয়ে যাবে। মোটকথা, তীব্র তাপদাহে গাছ যেন পানি স্বল্পতায় না ভোগে। কৃষিবিদ মিতা সরকার আরও জানান, বৃষ্টি না হলে কিন্তু লিচুর গুটির চামড়া পুড়ে যাবে। লিচু গাছের গোড়ায় যে সার ও পানি দেওয়া হয়। এতে লিচু গাছের নিচের মাটির রসে লিচু মাংসুল হবে। আর লিচুর গুটির উপরে বৃষ্টির পানি না পড়লে লিচুর চামড়া পুড়ে ফেটে যাবে। এ জন্য গাছের গোড়ায় নিয়মিত সেচ চালু রাখতে হবে। সম্ভব হলে গাছের ওপরে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে। পানি পেলে লিচু স্বাভাবিক থাকবে। কৃষি অফিসের পরামর্শক্রমে যদি লিচু বাগানের চাষি ও বাগান মালিকেরা এই পরিশ্রম করেন তবে কিছু ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সূত্র : বাংলা নিউজ২৪।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

© স্বত্ব সংরক্ষিত © 2022 রাজশাহী ট্রিবিউন ২৪
Theme Customized By Shakil IT Park
error: Content is protected !!