নিজস্ব প্রতিবেদক,তানোর:রাজশাহীর তানোরে উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অফিস সহায়ককে নারী শিশু নির্যাতনের মামলায় আসামিদের আটক না করার কারনে ওসির অপসারণ ও গ্রেফতার এর দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকালের দিকে তানোর পৌর এলাকার তালন্দ বাজারে এলাকাবাসীর ব্যানারে জনসাধারণ এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, স্থানীয় বাসিন্দা জাকারিয়া হোসেন, মাওলানা লাল মোহাম্মদ, মাবুদ হোসেন, ফারুক হোসেন, জহুরুল ইসলাম, রেবেন সরকার, জালাল হোসেন ও মাইনুল ইসলাম।
বক্তারা বলেন, গত ২৪ সেপ্টেম্বর থানায় নারী-শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অফিস সহায়ক নার্গিস বেগম। কিন্তু আসামিরা প্রকাশ্যে চলাচল করলেও রহস্য জনক কারণে আসামিদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না। ঘটনার পর কয়েক দিন স্বাস্থ্য কেন্দ্র বন্ধ ছিল। কারণ মাতাল অবস্থায় আসামি তালন্দ উত্তরপাড়া গ্রামের ওবায়দুর রহমান ওরফে হাবল, সারোয়ার জাহান সুজন ওরফে সজল ও শফিকুর রহমান ওরফে শফি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রবেশ করে কর্মরত নার্গিস বেগমকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজসহ তার জামা কাপড় ছিড়ে বেডে চোলাইমদ ঢেলে দেয়।
ঘটনার সময় আসামি সজলকে আটক করে পুলিশ। কিন্তু বাকি দুই আসামিকে আটক করা হয়নি। পুলিশ রাজনৈতিক নেতার কথায় আটক করছেন আসামিদের। চিকিৎসা কেন্দ্রে মাতাল অবস্থায় প্রবেশ করে এমন ঘটনার জন্ম দিলেও তাদেরকে আটক করা হচ্ছে না কেন এমন প্রশ্ন তাদের। ঘটনার ১১ দিন পার হলেও কোন কিনারা করতে পারেননি প্রশাসন। এটা পুলিশ প্রশাসনের ব্যর্থতা ছাড়া কিছুই নয়। এজন্য ওসির অপসারণ দাবি করা হয়েছে। কারণ ওসি রাজনৈতিক নেতার কথায় আসামি ধরছেন না।
বাদির স্বামী মাহবুব আলম বলেন, তারা মাদক সেবন করে চিকিৎসা কেন্দ্রে যে ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছেন তা কোন স্বাভাবিক ঘটনা নয়। তারা আমার স্ত্রীকে অন্যায় ভাবে গালমন্দ করেছে। একজন আসামিকে গ্রেফতার করে বাকিদের আটক করেনি পুলিশ। এত স্পর্শ কাতর ঘটনার পরও যদি ন্যায় বিচার না পাওয়া যায় তাহলে পুলিশ প্রশাসনের উপর সাধারণ মানুষের কিভাবে আস্থা থাকবে। একজন সরকারি চাকুরি জীবির উপর এমন স্পর্শ কাতর হামলা হল আর পুলিশ বসে থাকছে এটা হতে পারে না। বাকি দু’জন আসামিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে আটক করা হোক।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মিজান জানান, একজন আসামিকে আটক করা হয়েছে। অন্য দুজনকে আটকের জন্য অভিযান চলছে। আসামিরা প্রকাশ্যে চলাফেরা করলেও নাকি আটক হচ্ছে না জানতে চাইলে তিনি জানান, এটা সঠিক নয়, তবে কিছু সমস্যা তো আছেই।
এব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মিজানুর রহমান মিজান বলেন, একজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য দু’জন আসামি পলাতক রয়েছে। তাদের ধরতে প্রতিনিয়তই অভিযান চলছে। মানববন্ধন ও অপসারণ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, কর্মসূচি পালন করা সবার অধিকার। আমি আমার জায়গা থেকে সঠিক কাজ করছি কি না সেটাই বড় ব্যাপার।
প্রসঙ্গত, গত সেপ্টেম্বর মাসের ২৪ তারিখে তালন্দ উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসামিরা মাতাল অবস্থায় প্রবেশ করে হামলা ভাংচুর, বেডে মাদক ফেলা ও অফিস সহায়কের জামা কাপড় ছিড়াসহ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটায়। ওই দিন এঘটনায় স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অফিস সহায়ক নার্গিস বেগম বাদি হয়ে নারী শিশু নির্যাতন আইনে থানায় মামলা দায়ের করেন।
Leave a Reply