ডেস্ক রিপোর্ট :নবান্ন উৎসব বাঙালির ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে মিশে আছে। কৃষকের ঘরে নতুন ধান উঠলেই নওগাঁর বিভিন্ন অঞ্চলে উৎসবমুখরভাবে উদযাপন হয় এই নবান্ন উৎসব।
আমন ধান কাটার পর সেই ধান থেকে প্রস্তুত চালের প্রথম রান্না উপলক্ষে আয়োজিত উৎসব নবান্ন। সাধারণত অগ্রহায়ণ মাসে আমন ধান পাকার পর পরই এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এবং সে উপলক্ষে বিভিন্ন অঞ্চলে বসে গ্রামীণ মেলা।
প্রায় শত বছরের বেশি সময় ধরে নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার নজিপুর ইউনিয়নের পদ্মপুকুরে বসে নবান্নের মেলা। প্রতি বছরের কার্তিক সংক্রান্তিতে বসে এই মেলা।নবান্নের এই মেলাকে ঘিরে গ্রামীণ মানুষ এক অন্য রকম উৎসবের আমেজে মুখর হয়ে ওঠে। আশপাশের প্রায় ১৫টি গ্রামের মানুষ উদযাপন করে মেলাটি। সেই সঙ্গে বাড়িতে বাড়িতে শীতের পিঠা পুলি, নতুন ধান থেকে পাওয়া চালের পায়েস, ক্ষীর, ক্ষিরসা রান্না করা হয়।
মেলা থেকে ধানচালা কুলা, চালুনি, ডালা ইত্যাদি ক্রয় করেন গৃহবধূ ও গৃহকর্ত্রীরা। এদিকে গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই জামাই মেয়েসহ বিভিন্ন আত্মীয়-স্বজন আসেন, চলে খাওয়া দাওয়ার ধুম।একদিনের এ মেলা উপলক্ষে বিভিন্ন এলাকা থেকে দোকানিরা আগের দিন এসে দোকানে মিষ্টি মিঠাই, বাঁশ, বেত, মাটির তৈরি নকশি পাতিল, মাটির ব্যাংক, পুতুল, কাঠের তৈরি ফার্নিচার, কসমেটিক, খেলনা, বাঁশি, বেলুন, ঘূর্ণি, লোহার তৈরি হাঁসুয়া বটি, চাকু, কাগজের ফুল নানা রকম মুখরোচক খাবারের দোকান দিয়ে নানান জিনিসপত্রের পসরা সাজিয়ে বসেন।
মেলায় আগত চন্দনা রানী পাল নামে এক নারী দোকানি বলেন, অনেক বছর ধরে এই পদ্মপুকুর নবান্নের মেলাতে মাটির তৈরি তৈজসপত্র বিক্রি করে আসছি। আগে আমার পূর্ব পুরুষরা মাটির তৈরি হাঁড়ি, পাতিল, ঢাকনা, প্রদীপ দেওয়া ছোট বাটি, ধুপ জ্বালানো ধুপতীসহ নানা রকম মাটির তৈরি তৈজসপত্র বিক্রি করত এখন আমরা করি।
মেলা কমিটির সভাপতি শ্রী মনজ কুমার জানান, ব্রিটিশ শাসনামল থেকে এ মেলা হয়ে আসছে। মূলত নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে আমরা এই মেলার আয়োজন করে থাকি। তবে এদিন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকেরা সংক্রান্তি উপলক্ষে কালি পূজা অর্চনা করেন এখানে। ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার ছোট-বড় মানুষ আসেন এ মেলায়।
সূত্র : বাংলা নিউজ২৪।
সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. মিজানুর রহমান।
বার্তা সম্পাদক : বকুল হোসেন, সহ-বার্তা সম্পাদক : সৈয়দ মাহমুদ শাওন