আতাউর রহমান পলাশ, মোহনপুর: রাজশাহীর মোহনপুরে গরুর ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগের বিস্তার হয়েছে। এতে খামারিরা চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন। উপজেলার সবখানেই পারিবারিক ও বাণিজ্যিক পদ্ধতিতে হাজার হাজার গবাদিপশু পালন করা হয়। অধিকাংশ সময় গৃহপালিত গরুর শরীরে ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজসহ (এল.এস.ডি) নানা ধরনের রোগ সংক্রামণ হয়ে থাকে। আক্রান্ত গরুর রোগে চিকিৎসায় ফলপ্রসু সুফল মিলেনা। এতে অনেক গরু আক্রান্ত হয়ে প্রায় মারা যায়। ফলে গরু পালনকারিরা আর্থিকভাবে ব্যপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। সম্প্রতি ল্যাম্পি স্কিন রোগের বিস্তার লাভ করেছে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।তবে এর পরিমাণ ৫০ ভাগ কমিয়ে নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে সম্ভব হয়েছে বলে জানিয়েছে  উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতর।

সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গবাদিপশুর পুরাতন একটি রোগ হিসেবে পরিচিত (ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ) চামড়া পঁচা রোগ। কয়েক বছর পূর্বে এ অঞ্চলের গরুর গায়ে এ রোগটি দেখা দেয়ার পর সম্প্রতি বিস্তার লাভ করে। বড় গরুর তুলনায় বাছুর গরু এ রোগে বেশি সংক্রমণ  হচ্ছে। চিকিৎসা ব্যবস্থায় কাঙ্খিত সুফল মিলছে না। এজন্য অধিকাংশ সময় মারাও যাচ্ছে।

গ্রাম্য ভ্যাটেরিনারি চিকিৎসকদের সূত্র মতে সম্প্রতি ৭০ শতাংশ গরু ল্যাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।  আক্রান্ত গরুর ৩০ শতাংশ গরু জবাই করতে হচ্ছে কিংবা মারা যাচ্ছে। ল্যাম্পিং স্কিন রোগের সম্ভাব্য চিকিৎসার সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিকারক ঔষধ হিসেবে ব্যবস্থাপত্রে দেয়া হচ্ছে ভাইরোনিল, এফএল কেয়ার, প্যারাসিটামল, লাইসোভিট ও ভিটামিন সি জাতীয় ঔষধ।উপজেলার কেশরহাট পৌর এলাকার হরিদাগাছি গ্রামের আলহাজ্ব রুস্তম মন্ডল নামে একজন গরু পালনকারি বলেন, গত কয়েকদিন যাবত আমার গরু চামড়া ফুলা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। গরু কিছুই খায়নি, শুধু শুয়ে আছে দাঁড়াতেও পারেনি। চিকিৎসায় অনেক টাকা খরচ হয়েছে।

মামুর অর রশিদ নামের সিনিয়র গ্রাম্য পশু চিকিৎসক জানান, এটি একটি ভাইরাস জণিত রোগ। এর প্রভাব বর্তমানে খুব বেশি। প্রকৃত পক্ষে এর সুচিৎসা না থাকার কারণে অনেক গরু মারা যাচ্ছে। তবে পশু চিকিৎসকরা কৃষক এবং খামারিদের সচেতনতা মুলক পরামর্শ দিচ্ছেন। আক্রান্ত গরুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভিটামিন জাতীয় ঔষধ দেয়া হচ্ছে।

কেশরহাট বাজারের প্রাণী রোগের ঔষধ বিক্রেতা শায়লা পশু চিকিৎসালয়ের ব্যবস্থাপক পশু চিকিৎসক শফিকুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে গরুর চামড়া পঁচা, চামড়া ফুলা রোগের সর্বাধিক ব্যবস্থাপত্র আসছে। এরাগেরই বেশি ঔষধ বিক্রি হচ্ছে।মোহনপুর উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিসার প্রাণীবিদ ডা. শায়লা শারমিন বলেন, কয়েক সপ্তাহ আগে এ রোগের বিস্তার ছিল তবে বর্তমানে পঞ্চাশ শতাংশ নিয়ন্ত্রনে আনা সম্ভব হয়েছে। দ্রুত ল্যাম্পি জিডিজ আরো কমে আসবে বলে আশা করেন তিনি।