রাজশাহী ট্রিবিউন২৪ ডেস্ক : বুধবার (১ নভেম্বর) থেকে পরবর্তী নব্বই দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
সেই হিসাবে আগামী ২৯ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। তাই সব প্রস্তুতি গুছিয়ে নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, নির্বাচনের পরিবেশ অনুকূল বা প্রতিকূল থাকুক, আর কোনো অপশন নেই। সংবিধানে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
আজ থেকেই ইসির সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী, গাড়িচালক, নিরাপত্তা প্রহরীসহ সংশ্লিষ্টদের সব ছুটির দিনে অফিস করার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তাই তারা নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত সাপ্তাহিক এবং সরকারি ছুটি কোনোটাই কাটাবে পারবেন না।
নির্বাচন কমিশন স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হলেও সরকারি কর্মচারীদের প্রেষণে নিয়োগ করে নির্বাচনী কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হয় তাদের। তাই সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গেও ইসি আজ বসছে। ১১টি আলোচ্যসূচিতে করণীয় নির্ধারণ করা হবে আন্তঃমন্ত্রণালয় এ বৈঠক।
এগুলোর মধ্যে রয়েছে— ভোটকেন্দ্রের স্থাপনা মেরামত ও ভৌত অবকাঠামো সংস্কার; পার্বত্য বা দুর্গম এলাকায় হেলিকপ্টারে নির্বাচনী মালামাল পরিবহন এবং ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের ভোটকেন্দ্রে আনা-নেওয়ার বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ; নির্বাচনী প্রচার, উদ্বুদ্ধকরণ ইত্যাদি বিষয়ে প্রচার মাধ্যম কর্তৃক ব্যবস্থা গ্রহণ; দেশি বা বিদেশি পর্যবেক্ষক নিয়োগে সহায়তা প্রদান; পোস্টাল ব্যালটে ভোটপ্রদানের বিষয়ে সহযোগিতা; নির্বাচনে শান্তিশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে পরিকল্পনা গ্রহণ; ঋণ খেলাপি সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ, সংকলন ও প্রদান বিষয়ক কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত; নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালন এবং মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শোডাউন নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করার লক্ষ্যে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ; বার্ষিক ও পাবলিক পরীক্ষার সময়সূচি পর্যালোচনা; দৈনন্দিন আবহাওয়ার পূর্বাভাস সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনা ও নির্বাচনী এলাকায় বিদ্যমান নির্বাচনী প্রচার সামগ্রী অপসারণের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা প্রদান।
এরই মধ্যে তফসিল ঘোষণার আগে করণীয় কাজগুলোর প্রায় সবই শেষ করা হয়েছে। এখন বাকি ৩০০ আসন ভিত্তিক ভোটার তালিকা তৈরির কাজ। আগামী বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) তা সম্পন্ন করা হবে। আগামী নির্বাচনে কত সংখ্যক ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন সেদিনই তা নির্ধারণ করা হবে।
ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম জানিয়েছেন, নভেম্বরের প্রথমার্ধেই তফসিল দেবে নির্বাচন কমিশন। আর ডিসেম্বরের শেষ থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই অনুষ্ঠিত হবে সংসদ নির্বাচন। নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের শেষের দিকে ঘোষণা করা হতে পারে তফসিল। তার আগে বাংলাদেশ টেলিভিশন সিইসির দেওয়া জাতির উদ্দেশে ভাষণ রেকর্ড করবে। আর এই ভাষণেই তিনি তফসিল দিয়ে দেবেন।
এদিকে ২৮ অক্টোবরের সমাবেশ ঘিরে বিএনপির দেওয়া প্রথমে হরতাল এবং পরে অবরোধ কর্মসূচিতে সারাদেশেই সহিংস পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস বলেন, তার দেশ আশা করে, শর্তহীন সংলাপে বসে সব পক্ষ একটি সমাধানের পথে এগোবে। কেননা, গণতান্ত্রিক নির্বাচনে সহিংতার কোনো স্থান নেই।
নির্বাচন কমিশন নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আগে সংলাপে বসলেও শনিবার (৪ নভেম্বর) আবারও সংলাপের আয়োজন করছে। সেদিন সকাল ও বিকেলে ২২টি করে মোট ৪৪টি দলকে বৈঠকে বসার জন্য আমন্ত্রণ জানাবে ইসি। এক্ষেত্রে বিএনপিকেও আমন্ত্রণ জানানো হবে।
উল্লেখ্য, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটার ছিল ১০ কোটি ৪২ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৭ জন। সবশেষ ২০২২ সালের হালনাগাদ অনুযায়ী, দেশে ভোটার সংখ্যা ১১ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ৪৪০ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৭২৪ জন। আর নারী ভোটার ৫ কোটি ৮৭ লাখ ৪ হাজার ৮৭৯ জন। এ ছাড়া হিজড়া ভোটার রয়েছেন ৮৩৭ জন।
সূত্র : আরটিভি
Leave a Reply