1. admin@rajshahitribune24.com : admin :
  2. rajshahitribune192@gmail.com : editor man : editor man
হত্যার ঘটনায় অদ্ভুত শপথ, অতপর... - Rajshahi Tribune24 | রাজশাহী ট্রিবিউন২৪
শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

হত্যার ঘটনায় অদ্ভুত শপথ, অতপর…

  • প্রকাশিত : রবিবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৩
  • ৮০ বার পঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক : দরিদ্র ভ্যানচালককে খুন করে ভ্যানের ব্যাটারি ছিনতাই করা হয়। এরপর অভিযুক্ত এক হত্যাকারী আরেক অভিযুক্ত হত্যাকারীর সন্তানের মাথায় হাত দিয়ে শপথ নেন, এ কথা তাঁরা কাউকে বলবেন না। আসামি ধরা পড়লেও এই শপথের কারণে ঘটনার রহস্য উদ্‌ঘাটন করতে পুলিশের এক সপ্তাহ সময় লেগে যায়। রাজশাহীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী বলেছেন, এমন অদ্ভুত অপরাধ মনস্তত্ত্ব তিনি আগে কখনো দেখেননি।

গত ২৮ অক্টোবর সকালে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কাঁকনহাট পৌর এলাকা থেকে রিয়াজুল ইসলাম (২৩) নামের এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রিয়াজুলের বাড়ি রাজশাহী নগরের দামকুড়া থানার শীতলাই এলাকায়। তিনি পেশায় ভ্যানচালক ছিলেন। তাঁর দুই মাস বয়সী একটি সন্তান আছে।

সনাতন চক্রবর্তীর ভাষায়, ‘ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর আপাতভাবে বোঝা যাচ্ছিল, ভ্যানের ব্যাটারির জন্যই রিয়াজুলকে খুন করা হয়। তবে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের বিষয়ে পরিবারের সদস্যরা কোনো ইঙ্গিতই দিতে পারছিলেন না। ঘটনাস্থলে থাকতেই একটা শক্ত ক্লু পাওয়া গেল। গোদাগাড়ী সার্কেল অফিসার সোহেলকে নিয়ে কাঁকনহাট তদন্ত কেন্দ্রে চলে গেলাম। সেখানে গিয়ে আরও কিছুক্ষণ কাজ করার পর আরিফ নামের একজনকে পেয়ে গেলাম। তাঁর অবস্থান রাজশাহী শহরে, তিনি নিহত ব্যক্তির বন্ধু স্থানীয়। ডিবি টিমকে বলার পর তারা কিছুক্ষণের মধ্যে আরিফকে আটক করে আনল।’

সনাতন চক্রবর্তী বলেন, আটক আরিফকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তিনি মুখ খুলছিলেন না। অনেক চেষ্টার পর একপর্যায়ে তিনি জানান, দুজন ব্যক্তি পাঁচটি ব্যাটারি তাঁকে রাখার জন্য দিয়েছেন। এরপর ডিবির একটি দল আরিফের এক ভাইয়ের বাড়ি থেকে ব্যাটারিগুলো উদ্ধার করে নিয়ে আসে। কিন্তু কে খুন করেছে, কীভাবে ঘটনা ঘটেছে, সে ব্যাপারে তিনি কোনো তথ্যই দেননি। এরপর তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। সেখান থেকে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন আদালত। রিমান্ডের একপর্যায়ে আরিফ তাঁর এলাকার সজীব নামের একজনের নাম বললেন। সজীবকে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আগেই সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়েছিল। ডিবির সহায়তায় তাঁকে আটক করা হলো। দুজন মুখোমুখি। কিন্তু প্যাঁচ না খুলে আবার লেগে গেল। আরিফ বলেন, তাঁরা দুজনেই ছিলেন। আর সজিব বলেন, আরও একজন ছিলেন। এরপর গতকাল শনিবার রাতে সাকিল নামের সন্দেহভাজন একজনকে আটক করা হয়। এবার জট খুলে গেল। সবাই প্রকৃত ঘটনা বলে দিল। আলাদাভাবে এবং একসঙ্গে সবার বর্ণনা এক।

পুলিশের কাছে আসামিদের দেওয়া ঘটনার বর্ণনা অনুযায়ী, আসামি আরিফ ভ্যানচালক রিয়াজুল ইসলামের বন্ধু। তিনি দামকুড়া থেকে কাঁকনহাট পর্যন্ত রিয়াজুলের ভ্যান ভাড়া করে সজিব ও সাকিলকে তুলে দেন। নিজে আরেকটা ভ্যান নিয়ে পেছনে পেছনে যান। পথে রিয়াজুলকে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ঘুমের ওষুধ মিশ্রিত পানীয় খাওয়ান। একপর্যায়ে রিয়াজুলকে ফেলে ভ্যান নিয়ে চলে আসার সময় তিনি চিৎকার দিয়ে ওঠেন। তখন তিনজন মিলে তাঁর মাথায় আঘাত করেন এবং গলায় ফাঁস দিয়ে তাঁকে হত্যা করে ভ্যানের ব্যাটারি খুলে রাজশাহী শহরে চলে আসেন।

সনাতন চক্রবর্তী বলেন, ‘এ ঘটনার সবচেয়ে রহস্যজনক বিষয় হলো আরিফের মুখ না খোলা। গতকাল আদালতে পাঠানোর আগে যখন তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, তুমি এত কিছুর পরও মুখ খোলোনি কেন? সে বলল, “সাকিলের ছেলের মাথায় হাত রেখে কসম করেছিলাম, এই কথা কাউকে বলব না।”’

জেলা পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, এসপি স্যারের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় এবং তত্ত্বাবধানে গোদাগাড়ী সার্কেল অফিসার সোহেল রানা, আইসি কাঁকনহাট করিম, এস আই শাহেদ, ডিবি টিম এস আই ইনামুল প্রচণ্ড পরিশ্রম করেছে৷ দিনশেষে সন্তুষ্টি, এক নিষ্পাপ শিশুর পিতৃহত্যার বিচারের প্রাথমিক কাজ করতে পেরেছি বলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

© স্বত্ব সংরক্ষিত © 2022 রাজশাহী ট্রিবিউন ২৪
Theme Customized By Shakil IT Park
error: Content is protected !!