রাজশাহী ট্রিবিউন২৪ ডেস্ক : চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ ৯ মাসের তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৩ হাজার ৭২০ কোটি ২৬ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলারের, যা আগের বছরেরই একই সময়ের চেয়ে পাঁচ দশমিক ৫৩ শতাংশ বেশি। আগের বছরের মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে রপ্তানি হয়েছিল ৩ হাজার ৫২৫ কোটি ২৪ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার।
তৈরি পোশাক রপ্তানি আয়ের এ চিত্র একই সময়ে দেশের মোট রপ্তানি আয়ে প্রভাব ফেলেছে। ৯ মাসে মোট রপ্তানি আয় হয়েছে ৪ হাজার ৩৫৫ কোটি ৪৭ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার (৪৩ দশমিক ৫৫ বিলিয়ন ডলার), যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে চার দশমিক ৩৯ শতাংশ বেশি।
মঙ্গলবার (০২ এপ্রিল) এ তথ্য প্রকাশ করে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো।
জুলাই-মার্চ ৯ মাসের মোট রপ্তানি আয়ে প্রবৃদ্ধি হলেও লক্ষ্যপূরণ হয়নি। জুলাই-মার্চ ৯ মাসের কৌশলগত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ৬২৬ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার। সে হিসাবে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় শতাংশ কম রপ্তানি হয়েছে।
দেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক। তৈরি পোশাক রপ্তানির তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, একক মাস হিসাবে মার্চে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৪৩৪ কোটি ৬২ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার, যা আগের মাস ফেব্রুয়ারির চেয়ে কিছুটা কম। তবে আগের বছরের মার্চের চেয়ে ১১ দশমিক ৭১ শতাংশ বেশি। তৈরি পোশাক রপ্তানির এ চিত্র একক মাসের।
মার্চ মাস পর্যন্ত তৈরি পোশাক রপ্তানির এই প্রবৃদ্ধি বৈশ্বিক বাজারের প্রেক্ষিতে খারাপ নয় মনে করছেন তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, এই প্রবৃদ্ধি খুব একটা বেশি নয় আবার কমও নয়। বৈশ্বিক অর্থনীতি আসলে স্ট্রাগল করছে। কোভিডের সময় যে স্ট্রাগল শুরু হয়েছিল, সেটা যেতে না যেতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নতুন করে সমস্যা তৈরি করেছিল, সেগুলো এখনও চলছেই।
তিনি বলেন, পুরো বিশ্ববাজার আসলে ভালো নেই। পাইকারি বা খুচরা বাজারে যেখানেই বলি, এখন পর্যন্ত স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরে আসেনি। খুবই অনিয়মিতভাবে উঠা-নামা করছে।
তিনি বলেন, কোভিড মহামারীর পর রপ্তানি বাড়ার যে একটা সম্ভাবনা ছিল, সেটা আসলে আর স্থিতিশীল ছিল না। তৈরি পোশাকের বিশ্ববাজারই এখন ছোট হয়ে গেছে। এই ছোটর মধ্যেই আমরা ভালো করছি। এই অর্থে যে, ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি এখনও ধরে রাখতে পেরেছি। এই যে প্রায় পাঁচ শতাংশ প্রবৃদ্ধি আছে, এটাই হচ্ছে আমাদের প্রকৃত প্রবৃদ্ধি।
গতবছরের এই সময়ের সঙ্গে যদি তুলনা করি সেটাতে হয়তো সেইভাবে হয়নি; এইভাবে তুলনা করেও লাভ নেই। দেখতে হবে গড় প্রবৃদ্ধিটা কী।
আমরা বলছি পণ্যের বহুমুখীকরণ, বাজারের বহুমুখীকরণ আমরা করতে পেরেছি; এটি একটি দিক। আরেকটি দিক হলো, সব কিছুর দাম বেড়ে গেছে। এ কারণেও আমাদের রপ্তানি আয়ও বেড়ে যাচ্ছে। হ্যাঁ এমন নয় যে, ইউনিট আকারে বেড়ে গেছে।
তথ্য বলছে, ৯ মাসে তৈরি পোশাকের ওপর ভর করে মোট রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি বজায় থাকলেও অধিকাংশ অ-প্রধান পণ্য নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে; কমে গেছে আগের বছরের চেয়ে।
তথ্যে দেখা যায়, হিমায়িত মৎস্য রপ্তানি হয়েছে ২৯ কোটি ৯২ লাখ মার্কিন ডলারের; আগের বছরের চেয়ে কমেছে ১৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৭৯ কোটি ৪১ লাখ ৯০ হাজার মার্কিন ডলারের; কমেছে ১৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ। পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়েছে ৬৫ কোটি ৯৫ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার; আগের বছরের চেয়ে কমেছে পাঁচ দশমিক ছয় শতাংশ। আরেক সম্ভাবনাময় হোম টেক্সটাইল রপ্তানি হয়েছে ৬৩ কোটি ৬৫ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার; আগের বছরের চেয়ে কমেছে ২৫ দশমিক ৯৮ শতাংশ।
গত বছরের চেয়ে রপ্তানি বাড়ার পেছনে উল্লেখযোগ্য রপ্তানি পণ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম জুতা। জুতা রপ্তানি হয়েছে ৩৮ কোটি ৫৭ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার; প্রবৃদ্ধির হার সাত দশমিক ৬৭ শতাংশ। প্লাস্টিক পণ্য রপ্তানি হয়েছে ১৮ কোটি ২৮ লাখ মার্কিন ডলার; প্রবৃদ্ধির হার ১৮ দশমিক ১৬ শতাংশ। কৃষিপণ্য রপ্তানি হয়েছে পাঁচ দশমিক ছয় শতাংশ; কৃষিপণ্য রপ্তানি হয়েছে ৭১ কোটি ৫৮ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলারের।
সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন।
Leave a Reply